31 Jan 2025, 03:46 am

২০২৪ হবে উষ্ণতম বছর : ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনিটর

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষক সোমবার জানিয়েছে, চলতি বছর যে উষ্ণতম বছর হবে তা ‘কার্যকরভাবে নিশ্চিত’ এবং এ বিপজ্জনক অতিরিক্ত উত্তাপ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।

কোপার্সনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইইউ সংস্থাটি তার মাসিক বুলেটিনে বলেছে, ‘এই মুহূর্তে, এটি কার্যকরভাবে নিশ্চিত যে ২০২৪ হতে চলেছে উষ্ণতম বছর।’

আরেকটি ভয়াবহ মাইলফলক হিসেবে, প্রাক-শিল্প সময়ের চেয়ে ২০২৪ হবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম। শিল্প বিপ্লবের সময় থেকেই বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়াতে শুরু করে।

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, এক দশক দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ১০ বছর ধরে চললে তা পৃথিবীকে বিপন্ন করে তুলবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে বিশ্বের দেশগুলো উষ্ণতা সীমাবদ্ধ ও তাপমাত্রা নিরাপদ মাত্রায় রাখতে সম্মত হয়েছিল।

কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস বলেন, এক বছর এই তাপমাত্রা ১.৫ সি. এর উপরে হওয়া মানে, এই নয় যে প্যারিস চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। তবে এর মানে এই যে উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপ কঠোরভাবে মেনে চলা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি।

বিশ্বকে কয়লা, তেল ও গ্যাস থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গমন বাড়ছে। এগুলো যখন পোড়ানো হয়, তখন জীবাশ্ম জ্বালানি গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো ছেড়ে দেয়, যা পৃথিবীর মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডলকে উষ্ণ করে তোলে। এটা জলবায়ু প্যাটার্ন ও পানি-চক্রকে ব্যাহত করে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণতা চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোকে আরও ঘন ঘন ও প্রলয়ঙ্করী করে তুলছে।

২০২৪ স্পেন ও কেনিয়াতে মারাত্মক বন্যা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনে ভয়াবহ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় এবং দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে তীব্র খরা ও দাবানল দেখা দিয়েছে।

বীমা জায়ান্ট সুইস রে চলতি মাসে জানিয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলোতে ২০২৪ সালে মোট ৩১০ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।

এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষভাবে দুর্বল এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বছরে তাদের ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রয়োজন হবে।

নভেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনায় ধনী দেশগুলো  ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ মুহূর্তে যে সময়কাল চলছে, তা সম্ভবত গত ১২৫,০০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম।

এমনকি এই মানগুলোর দ্বারা ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে প্রত্যক্ষ করা অস্বাভাবিক তাপ বৈজ্ঞানিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

২০২৪ সাল এল নিনোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। একটি এমন একটি প্রাকৃতিক অবস্থা, যা উষ্ণ পানির চারপাশে ঘোরাফেরা করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।

কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই ধরনের চক্রীয় পরিবর্তনশিলতা বায়ুমণ্ডল এবং সমুদ্রে রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপ একা ব্যাখ্যা করতে পারে না।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ জলবায়ু উপদেষ্টা সংস্থা আইপিসিসি-র বিজ্ঞানী রবার্ট ভাটার্ড এএফপিকে বলেছেন, সর্বশেষ এল নিনোর পর তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তবে ‘খুব’ ধীরে ধীরে। এর কারণগুলি বিশ্লেষণ করতে হবে।

কোপার্নিকাস জলবায়ু বিজ্ঞানী জুলিয়ান নিকোলাস বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলি ‘স্পষ্টতই ব্যতিক্রমী’ ছিল।

তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা যত বেশি তথ্য পাচ্ছি যে, কী ঘটেছে তা আরও ভালভাবে বুঝতে পারব বলে আমরা আশা করছি।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 2286
  • Total Visits: 1532015
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1698

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শুক্রবার, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ ইং
  • ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শীতকাল)
  • ১লা শা'বান, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ৩:৪৬

Archives

MonTueWedThuFriSatSun
15161718192021
293031    
       
  12345
2728     
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
31      
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930   
       

https://youtu.be/dhqhRb9y018